খবরপ্রধান খবরসর্বশেষসারাদেশ

সপ্তাহে দুদিন অফিস করা প্রকল্প পরিচালককে সার্বক্ষণিক চায় চসিক

আজকের সারাদেশ রিপোর্ট:

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নগরের সড়ক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালকের দায়িত্বে আসা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. গোলাম ইয়াজদানী সপ্তাহে মাত্র দুদিন বুধবার ও বৃহস্পতিবার অফিস করেন। ফলে প্রকল্পটির কাজে গতি আসছে না এবং নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পন্ন হওয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এজন্য তাকে সার্বক্ষণিক অফিসে উপস্থিতির অনুরোধ জানিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে চসিক। গত বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ বিষয়ে নির্দেশনা জারির অনুরোধ জানানো হয়।

গত ১৪ আগস্ট ২ হাজার ৪৯০ কোটি ৯৬ লাখ ৬৯ হাজার টাকা ব্যয়ে ‘চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আওতায় এয়ারপোর্ট রোডসহ বিভিন্ন সড়কসমূহ উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় মো. গোলাম ইয়াজদানী। এরপর গত ২০ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে আরেকটি অফিস আদেশে তাকে সপ্তাহে দুদিন চসিকে কাজ করতে বলা হয়।

এর আগে গত ৪ জানুয়ারি ২ হাজার ৪৯০ কোটি ৯৬ লাখ ৬৯ হাজার টাকা ব্যয়ের প্রকল্পটি অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। প্রকল্পটিতে সম্পূর্ণ অর্থায়ন করবে সরকার। জিও অনুযায়ী প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ২০২২ সালের ১ মার্চ থেকে ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। শুরুতে চসিকের প্রধান প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলামকে প্রকল্পটির পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় তাকে সরিয়ে দিয়ে গত ১৪ জুলাই চসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) আবু সাদাত মোহাম্মদ তৈয়্যবকে অস্থায়ী প্রকল্প পরিচালক করা হয়। এরপর ১১ আগস্ট স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করে তাকে প্রকল্প পরিচালক থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, “সিটি কর্পোরেশনের এ যাবৎকালের সবচেয়ে বৃহৎ প্রকল্পটির সুষ্ঠু বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্প পরিচালকের পদটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রকল্পটি যথাসময়ে বাস্তবায়নের সাথে আগামী জাতীয় নির্বাচন ও সরকারের ভাবমূর্তির বিষয় জড়িত রয়েছে। কারণ এ প্রকল্পের মাধ্যমে চট্টগ্রামের নান্দনিক সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে। এ ধরনের প্রকল্পে প্রকল্প পরিচালকের কর্মস্থলে সার্বক্ষণিক উপস্থিতি একান্ত প্রয়োজন। প্রকল্প পরিচালক যদি চসিকে সপ্তাহে শুধুমাত্র দুদিন দায়িত্ব পালন করেন তাহলে প্রকল্প বাস্তবায়ন দীর্ঘায়িত হবে। সিটি মেয়র এ প্রকল্পের মাধ্যমে চট্টগ্রাম শহরের যে পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা করেছেন তা ব্যাহত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে বৃহৎ প্রকল্পটির সুফল হতে বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম বঞ্চিত হবে।”

এ প্রসঙ্গে চসিক মেয়র এম. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পের পরিচালক বেশি থাকলে আমাদের জন্যও সুবিধা বেশি। পুরো সপ্তাহ এখানে থাকলে কাজেও গতি আসবে। তাই তাকে যেন সার্বক্ষণিক চসিকে রাখা হয় বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে।”

প্রকল্পটির আওতায় বিমানবন্দর সড়ককে চার লেনে উন্নীত করার পাশাপাশি ৬০০ মিটার ওভারপাস নির্মাণ করা হবে। ওভারপাস নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ৮৪ কোটি টাকা। এছাড়া ২ হাজার ১০৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকায় নগরের ৭৬৯ কিলোমিটার রাস্তার উন্নয়ন, ৫৬ কোটি টাকায় ২২৪ মিটার করে ১৪টি ব্রিজ, ৫৮ কোটি টাকায় ১৫২০ মিটার করে ৩৮টি ফুট ওভারব্রিজ, ১৪ কোটি টাকায় ৮৭ মিটার করে ২২টি কালভার্ট নির্মাণ, ১২ কোটি টাকায় ১০টি গোল চত্বরের উন্নয়ন করা হবে। প্রকল্পের আওতায় ২৯ কোটি ৮০ লাখ টাকায় ১৫টি নির্মাণ যন্ত্রপাতিও ক্রয় করা হবে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button